“পড়াশুনার পাশাপাশি একটা ব্যবসা দাড় করানো এবং সেটাকে টিকিয়ে রাখা আমার জন্য অনেক কঠিন ছিলো।“ বলছিলেন একটি বুটিক স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা মরিয়ম ইসলাম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন নীলক্ষেতে অবস্থিত হোম ইকনোমিক্স কলেজের চতুর্থ বর্ষের একজন শিক্ষার্থী। ভারত থেকে কাপড়, পার্স, শো পিসসহ মেয়েদের বিভিন্ন পণ্য দ্রব্য এনে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করেন পুরো ঢাকা শহরে। ওয়েবসাইট এবং ফেইসবুকের মাধ্যমে, ব্যক্তিগত সম্পর্কের সহায়তায় তিনি নতুন নতুন কাস্টমারদের পণ্য সরবরাহ করেন। “ আমাদের দেশে একটা ব্যবসা শুরু করা আসলেই অনেক চ্যালেঞ্জিং” তিনি বললেন। “প্রতিটা শিক্ষার্থী উদ্যোক্তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এমনকি আমার বন্ধুরা, আত্মীয় স্বজন, অন্যান্য বেশিরভাগই আমার সমালোচনা করেন। প্রথমত আমি কেনো পড়শুনা রেখে এসব আজগুবি কাজে সময় ব্যয় করছি, দ্বিতীয়ত একজন মেয়ে হয়ে কেনো ব্যবসা শুরু করেছি।“ তিনি আরো যোগ করলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদ মজনু ও তার দুই বন্ধু মিলে রাজকুটির নামক ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পণ্য দ্রব্য বিক্রি করার মাধ্যমে মার্কেটে নামেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতকালীন গরম কাপড় হুডী বিক্রির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বাজ মার্কেটিং, প্রজিউমার মার্কেটিং এবং ওয়ার্ড অব মাউথের মাধ্যমে ব্যাপক সারা ফেলতে সক্ষম হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বশত যে ধরনের কোয়ালিটি পণ্য ডিস্ট্রিবিউশন করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেটা ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। মিঃ আসাদ বলেন “ আমাদের কোনো পরিচিত গার্মেন্টস ছিলোনা ফলে আমরা একজন বড় ভাইয়ের সাহায্য নেই। যে ধরণের কাপড় দেয়ার কথা ছিলো, যে ধরণের ডিজাইন দেয়ার কথা ছিলো সেটা তারা করতে ব্যর্থ হয়। আমরা আসলে এটা একটা শিক্ষা হিসেবে নিচ্ছি। আপনি যে ব্যবসাই করুন না কেনো ওটার সম্পূর্ণ খুঁটিনাটি আপনার জানা লাগবে। কিন্তু আমাদের সেই শূন্যস্থানটা ছিলো। আমাদের অনেক বড় প্ল্যান ছিলো কিন্তু শুরুতেই ধাক্কা খাওয়ায় সেটা সামলে উঠতে পারিনি। ফলে আমাদের স্টার্টআপটা ফেইল করে।“
এভাবেই হাজারো শিক্ষার্থী বিজনেস করার উদ্যোগ নিলেও বিভিন্ন কারনে গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়। কারো কারো শুরু করার আগেই শেষ হয়ে যায় আবার কেউ কেউ আরো কিছু দূর গিয়ে ভেঞ্চার গুলো ছেড়ে দেয়। যদিও অনেক শিক্ষার্থী ব্যবসায়ে সাফল্যের মুখ দিচ্ছে না কিন্তু একই সাথে বিপরীত চিত্রও ফুটে উঠছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ বিভাগের ছাত্র হিমেল। পড়াশুনা করেও পাঞ্জাবী বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বছর দুয়েক আগে। ঈদ এবং বিভিন্ন উৎসবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রোমোশনাল কাজ গুলোও করে পাশা পাশি পার্সোনাল সেলিংইয়ের দিকেও নজর দিয়েছে। ফলে প্রতি বছরই রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট বাড়ছে। “যদিও পড়াশুনার পাশাপাশি বিজনেস করতে অনেক বেশি বাধার সম্মুখীন হতে হয় তবুও আমরা এটা আমাদের জন্য সহজ করে নিয়েছি” ইলিয়াছ হিমেল বলেছিলেন।
কিছু শিক্ষার্থী ব্যবসায়ে সফল হলেও বেশির ভাগই ব্যর্থতার মুখ দেখছে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশ গুলোতে যখন অনেক বেশি ইনভেস্টমেন্ট দরকার তখন শিক্ষার্থীদের এসব উদ্যোগ দেশকে আরো এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। বেশ কিছু ব্যাপার শিক্ষার্থীদের এসব উদ্যোগ ব্যাহত হতে অথবা কার্যকর ভাবে চালিয়ে নিতে সাহায্য করে। আমরা তার ভিতর থেকেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো আলোকপাত করছি।
ধৈর্য ধরুন মনোযোগের সহিতঃ
ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে একটি বাচ্চা বড় করার মত। দিনের পুরোটা সময় আপনার যেমন বাচ্চার প্রতি খেয়াল রাখতে হয় এমনকী যখন আপনি ঘুমে থাকেন, ব্যবসার প্রতিও ঠিক একই ভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে হয় সব সময়। ব্যবসা শুরু করাটা আসলে খুব বেশি কঠিন কিছু না, একটা আইডিয়া নিয়ে এসে বিজনেস শুরু করতে পারেন। কিন্তু সেটাকে নিয়মিত যত্ন করা, লালন পালন করা এবং একটা সফল ভেঞ্চার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাই সবচেয়ে কঠিন কাজ। ব্যবসা যতই বড় হবে ততই কঠিন কঠিন সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে।
বিজনেস পরিচালনা করার জন্য লোকবল নিয়োগ দেয়া, প্রোডাক্ট সোর্স করা, প্রোমশন করা, প্রোডাক্ট বণ্টন করা, পুরো ব্যাপারটা ম্যানেজ করা এবং সর্বোপরি বিক্রয়লব্ধ অর্থ উত্তোলন করার জন্য যথেষ্ট ধকলের সম্মুখীন হতে হয়। এসময় অবশ্যই ধৈর্য ধারন করতে হবে এবং প্রত্যেকটা বিষয় সামাল দিতে হবে। আমাদের দেশের নতুন উদ্যোক্তাগণ সবসময়ই চায় খুব দ্রুতই যেন লাভ করতে পারে। কিন্তু খুব কম সংখ্যক উদ্যোক্তাই ব্যবসায়েই শুরু থেকেই লাভ করতে সম্ভব হয়। এমনকী বিশ্বে টেক কোম্পানী ছাড়া কোনো ব্যবসাই রাতারাতি প্রফিট করতে সক্ষম হয়নি। তবুও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ধৈর্য ধরতে পছন্দ করেন না। ফলে তারা লাভ না আসলে নতুন কোনো ব্যবসার দিকে ধাবিত হয়। অল্প সময়ের ভিতর প্রফিট করতে চাওয়ার মানসিকতা একটা স্টার্টআপকে অংকুরেই বিনষ্ট করে দেয়।
বড় এবং দীর্ঘস্থায়ী লক্ষ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করুন। এই ব্যবসায়ের মাধ্যমে পাঁচ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান। পরিকল্পনা করুন সেভাবে। এবং মনোযোগ দিন ধৈর্য রাখতে। কারণ দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা আপনাকে এক্ষেত্রে সাহায্য করবে।
বড় এবং দীর্ঘস্থায়ী লক্ষ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করুন। এই ব্যবসায়ের মাধ্যমে পাঁচ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান। পরিকল্পনা করুন সেভাবে। এবং মনোযোগ দিন ধৈর্য রাখতে। কারণ দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা আপনাকে এক্ষেত্রে সাহায্য করবে।
সমালোচনা? সামাল দিনঃ
“উদ্যোক্তা হতে চাও? এটা তোমার জন্য মরীচিকা। এটা তাদের জন্য যাদের পারিবারিক ব্যাকআপ আছে।“ বলছিলেন হিমেল। বিজনেস শুরু করার পর এভাবেই মানুষ তাকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলো । “আমি কেবল তাদের দিকে তাকিয়ে থাকতাম এবং বাঁকা হাসি দিতাম। বাঁকা হাসি মানে আমি তাদের অবজ্ঞা করিনি বরং আমার সম্পর্কে তাদের ছোট ধারণাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করতে প্রস্তুত ছিলাম।“
প্রতিটা উদ্যোক্তাই তার আশপাশের মানুষ কর্তৃক সমালোচিত হয়ে আসছে। খুব কম মানুষই তাদের পাশে এসে কাঁধে হাত দিয়ে দাড়িয়েছে। এটা হতে পারে ঈর্ষাপরায়ণতা কিংবা অন্যকে হেয় বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার উদ্দেশ্য নিয়ে। অনেক মানুষই শিক্ষার্থী উদ্যোক্তার পিছনে উৎসাহিত হয়ে লেগে থাকে তাদের সমালোচনা করা এমনকি বিজনেস করায় বাঁধা দান করায়।
ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্রান্সন যখন তার ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠা করেন তিনিও তখন সমালোচিত হয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তরুণ এবং শিক্ষার্থী উদ্যোক্তাদের জন্যে তিনি কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। “ সমালোচকদের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য তোমাকে যেন স্বপ্ন পূরণের পথ থেকে বিচ্যুত না করে। যে সকল শুভাকাঙ্ক্ষী তোমার উপর বিশ্বাস এবং ভরসা করে তাদের সাথে থাকো”। তিনি আরো উপদেশ দেন “ কিছু মানুষ সবসময়ই থাকবে যারা পরিবর্তন নিয়ে ভয়ে থাকে। নতুন আইডিয়া নিয়ে চিন্তায় থাকে। এজন্য তারা সবসময়ই চায় অন্যদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিতে। আমি এটা জানি, কারণ এই ধরণের লোক আমার জীবনে প্রচুর এসেছে। এবং বেশির ভাগ সময়েই তারা আমাকে সমালোচনা ও অনুৎসাহিত করেছিলো। তোমার যা করতে হবে তা হচ্ছে অনেক বেশি পরিশ্রম করা, প্যাশনটা ধরে রাখা এবং নিজেকে বিশ্বাস করা।“
কিছু মানুষ সবসময়ই থাকবে যারা পরিবর্তন নিয়ে ভয়ে থাকে। নতুন আইডিয়া নিয়ে চিন্তায় থাকে। এজন্য তারা সবসময়ই চায় অন্যদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিতে। আমি এটা জানি, কারণ এই ধরণের লোক আমার জীবনে প্রচুর এসেছে।
মূলধন সংগ্রহ নিয়ে টেনশন নয়ঃ
আল সাবাহেল চেয়েছিলেন হস্তশিল্প নিয়ে কোনো কিছু করা যায় কি না। দেশের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে তুলে একই সাথে নিজের একটা হিল্লে করার চিন্তা করেছিলেন তিনি। রূপগঞ্জ, বি বাড়িয়া, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা বা শহরে সাপ্লাইয়ারদের সাথে কথাও বলেছিলেন প্রোডাক্ট সোর্সিংয়ের জন্য। মিঃ সাবাহেল এফ কমার্স শুরু করেছিলেন অল্প কিছু বিনিয়োগের মাধ্যমে। ব্যবসা যখন বড় হতে থাকলো তখন আস্তে আস্তে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রয়োজন পড়লো। কাস্টমারদের দ্রুত পণ্য ডেলিভারি নিশ্চিত করা, প্রোমশনাল কাজের পরিধি বাড়ানো সহ বিভিন্ন জায়গায় খরচের দরকার হল। ছয় মাসের মাথায় তার পক্ষে আর বিনিয়োগ করা সম্ভব হলো না। ফলে স্টার্ট আপটি বন্ধ করতে বাধ্য হলো। শিক্ষার্থী উদোক্তাদের অচিরেই হারিয়ে যাওয়ার এটাও একটা কারণ। তারা পরিবার থেকে যেমন মানসিক বা আর্থিক সমর্থন পেতে অসমর্থ হয় তেমনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোও তাদের দিকে মুখ তুলে চায় না। আমাদের দেশে ব্যাংক গুলো নতুন উদ্যোক্তাদের লোন দিতে উৎসাহিত হয় না। এতে হাজারো উদ্যোগ কিছু দিনের মাথায়ই মুখ থুবড়ে পড়ে।
যেহেতু আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে এই মতামত প্রতিষ্ঠিত যে তারা কেবল পড়াশুনা করবে বিজনেস নয় এবং তাদেরকে লোন দিলেও সেটা রিটার্ন দিতে সক্ষম হবেনা, এজন্য এঞ্জেল বিনিয়োগকারীও খুব একটা নেই। তাই শিক্ষার্থীরা যে ধরণের ব্যবসা কম বিনিয়োগেই করা যায় তার প্রতি নজর দেয়া উচিৎ। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেও তারা শুরুটা করতে পারে একদম কম খরচে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি প্রাথমিকভাবে তারা ইন্টারমিডিয়ারি হিসেবে মাঠে নামে। তাতে ফরওয়ার্ড এবং ব্যাকওয়ার্ড বিজনেস সম্পর্কেও যেমন জ্ঞানার্জন হবে, একই সাথে কম বিনিয়োগ ও কম রিস্ক নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব।
বিজনেস করুন পড়াশুনার পাশাপাশিঃ
গ্রীন ইনফো টেকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও মিঃ মতিউর রহমান মনে করেন উদ্যোক্তা হতে চাওয়া একজন শিক্ষার্থীর যত দ্রুত সম্ভব ব্যবসায়ে নেমে যাওয়া উচিৎ। পড়াশুনা চলাকালীন পারিবারিক চাপ কম থাকায় ঝুঁকি নেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাওয়া সম্ভব। একই সাথে তাদের থিওরিটিক্যাল জ্ঞান গুলোকে বাস্তবেও প্রয়োগ করার সুযোগ থাকে যদি তারা এসময়ই ব্যবসা শুরু করে।পড়াশুনার পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করা এবং সেটা গ্রো করা অনেকটাই কঠিন। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে দূরদর্শী শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই সেটা অতিক্রম করতে পারে যেমনটি করেছিলো মরিয়ম। ব্যবসাটাকে সে বোঝা হিসেবে না নিয়ে পড়াশুনার পাশাপাশি ভিন্ন কিছু করার সুযোগ হিসেবে নিয়েছিলো। ক্লাস করার পর বাকি সময়টা সে বিজনেসের পিছনে ব্যয় করে যাতে স্টার্টআপটা বড় একটা পর্যায়ে গিয়ে দাড়ায়। এখন পর্যন্ত সে ভালো ভাবেই পরিচালনা করে আসছে।
পড়াশুনার পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করার তিনটি কৌশল আছে।
১। চমৎকার এবং বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা।
২। দৈনন্দিন কাজের প্রাধান্যের ভিত্তিতে বিভক্ত করা।
৩। সর্বোপরি সময়ের সঠিক ব্যবহার করা।
প্রতিদিন রাতেই শিক্ষার্থীরা ঠিক করে নিতে পারে তার পরের দিনের কাজ গুলো। কয়েকটি এপ্সও আছে যা তাদের কাজের ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। আসানা, টুডুইস্ট,টু ডু ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিটা মিনিটকেই উপযোগে পরিণত করতে পারে। সময় ম্যানেজ শিখার জন্য স্টিফেন কভের টাইম ম্যানেজমেন্ট ম্যাট্রিক্স কৌশলটা অনুসরণ করা যেতে পারে। কোন কাজ গুলো জরুরী এবং কোন কাজ গুলো গুরুত্বপূর্ণ সেটার ভিত্তিতে সময় নষ্ট করা হতে নিজেদের বাঁচাতে পারে।
সঠিক উৎস বের করা খুবই সহজঃ
প্রাথমিক ভাবে ব্যবসা শুরু করার তিনটি সেক্টর আছে। প্রডিউসার হওয়া, ইন্টারমিডিয়ারি হওয়া, এবং রিটেইলার হওয়া। যে কোনো সেক্টরে ব্যবসা শুরু করার পূর্ব শর্ত হচ্ছে সেই বিজনেস সম্পর্কে সব ধরণের তথ্যাবলী ধারণা থাকা। কোথা থেকে পণ্য সংগ্রহ করা যাবে, কাদের কাছে পাওয়া যাবে, দর কষাকষির ক্ষমতা কতটুকু এ বিষয়ের উপাত্ত জানা থাকা চাই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভালো নেটওয়ার্কিংয়ের অভাবে শিক্ষার্থীরা সঠিক সাপ্লাইয়ার খুঁজে পেতে অসমর্থ হয়। রাজকুটিরও ঠিক একই কারনে ব্যর্থ হয়। তারা নেটওয়ার্কিং না থাকায় প্রমিজিং সাপ্লাইয়ার খুঁজে পায়নি ফলে কাস্টমারদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহে অক্ষম হয়। যদি তারা দক্ষ, কর্মঠ এবং প্রমিজিং সাপ্লাইয়ার পেত তাহলে কাস্টমারদের পরিতৃপ্ত করা সম্ভব হত। এবং বিজনেস চালিয়ে নিতেও আগ্রহ তৈরি হত।
কলিন পাওয়েল স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক পুনিত অরোরা পরামর্শ দিয়েছেন “ শিক্ষার্থীদের প্রথমে তাদের নিজেদের দক্ষতার জায়গাটা বের করা উচিৎ। এবং তার যে দক্ষতার অভাব রয়েছে সে বিষয়ে এমন কাউকে খুঁজে বের করা যার ঐ স্কিলটা আছে এবং কোম্পানীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নেটওয়ার্কিং থাকাটাও দরকার। কারন এর মাধ্যমে তুমি অনেক দূর যেতে পারবে যার নেটওয়ার্কিং নেই সে সেখানে পৌঁছতে পারবে না। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে পারো, এবং আগের পরিচিত মানুষদেরও প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর নাও। একটু হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারো সব কিছু ঠিক তো?।“
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে পারো, এবং আগের পরিচিত মানুষদেরও প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর নাও। একটু হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারো সব কিছু ঠিক তো?
জনসংখ্যার ভিত্তিতে বাংলাদেশ অষ্টম স্থান দখল করে আছে। উন্নয়নশীল এ দেশটি অনেক ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করে যাচ্ছে। সেই সমস্যা গুলোর সমাধান করে বিজনেস শুরু করার সুযোগ ও সম্ভাবনা শিক্ষার্থীদের রয়েছে। যদিও উপরের বাঁধা গুলো প্রতিটা শিক্ষার্থীরই সম্মুখীন হতে হবে। ছোটখাটো কিছু কৌশল অবলম্বন করলেই তা উৎরে যাওয়া সম্ভব। কম বিনিয়োগেও তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্টার্টআপ শুরু করতে পারে। ই-কমার্স, এফ-কমার্স,এম-কমার্স সেই সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে। সুতরাং এখনই সময় ব্যবসা শুরু করার। যদি মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিজনেস শুরু না করে তবে কে এগিয়ে আসবে? যদি এখনই শুরু না করে তবে কখন?