20060307ব্যবসার জগতে সবসময়ে নিজেকে প্রতিযোগিদের চেয়ে আলাদা( ইতিবাচকভাবে) করার গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না। এই আলাদা অবশ্যই কাস্টমারের দিক থেকে। মানে আপনার পণ্য বা প্রতিষ্ঠান যে প্রতিযোগিদের চেয়ে আলাদা সেই সার্টিফিকেট আসতে হবে কাস্টমারের দিক থেকেই। এখন প্রশ্ন হলো – কিভাবে বুঝবেন আপনার পণ্য কাস্টমারের মনে আলাদাভাবে স্থান পেয়েছে? আপনার পণ্যের বিক্রয়ের পরিমাণ থেকে এই বিষয়টা আন্দাজ করা যায়। কাস্টমারের মনে আলাদাভাবে স্থান পাওয়া মানেই কাস্টমার যখন আবার সেই ধরনের পণ্যের প্রয়োজন অনুভব করবে তখন আপনার ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হবে।কিভাবে নিজের পণ্য বা প্রতিষ্ঠানকে কাস্টমারের মনে আলাদাভাবে স্থাপন করা যাবে সেই উত্তর এখানে দিচ্ছি না- এটা নিয়ে আলাদা একটা নিবন্ধ লেখার আশা রাখি।এখানে কোম্পানির পণ্যকে আলাদা করার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর উপর নজর রাখতে হয় সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। মোটামুটি ৬ টি বিষয়ের উপর নজর রাখা আবশ্যক।

১. পার্থক্যটুকু কাস্টমারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কিনা- প্রতিযোগিদের সাথে নিজের পার্থক্যটুকু কাস্টমারের কাছে যদি গুরুত্বপূর্ণ না হয় তাহলে সেই পার্থক্যের কোন মূল্য নেই।যেমনঃ কোন সাবান কোম্পানি দশটা ভিন্ন রঙের সাবান বাজারে নিয়ে আসল। এখন সাবান কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতা যদি সাবানের রঙকে খুব বেশি গুরুত্ব না দেয় সেক্ষেত্রে দশ রঙের সাবানের ব্যাপারটা কোম্পানিকে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হবে।

২. পার্থক্যটুকু চোখে পড়ার মতো কিনা– প্রতিযোগিদের পণ্য থেকে নিজের পণ্যকে যতটুকু আলাদা করলে ক্রেতার চোখে পড়বে ততটুকু আলাদা করতে হবে। কোনোভাবেই যাতে এর কম না হয়। যেমনঃ ফেয়ার & লাভলী ১০০ মিলি বডি লোশনের দাম যেখানে ৮০ টাকা,সেখানে ১০০ মিলি মেরিল বডি লোশনের দাম ৬০ টাকা।দামের এই বিশাল পার্থক্যের কারণে মেরিল বডি লোশন সম্পূর্ণ আলাদা একটা ইনকাম গ্রুপকে এই দামের মাধ্যমে ধরতে পেরেছে।

৩. পার্থক্যটুকু অবশ্যই “সুপারিওর” হতে হবে– পণ্য বা সেবাটি আলাদা করা করলেই নিশ্চিন্তে থাকা যাবে ব্যাপারটা তেমন নয়।  ক্রেতা সেই পার্থক্যটুকু প্রতিযোগিদের পণ্য বা সেবা থেকে আরো ভালো ভাবছে কিনা সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।

৪. পার্থক্যটুকু যাতে সহজেই নকল করা না যায় – ধরুন, একটা পণ্যের দাম কমিয়ে সেটাকে প্রতিযোগিদের পণ্য থেকে একটু আলাদা করা হলো। কিন্তু প্রতিযোগীও যদি দাম কমিয়ে আপানার জায়গায় এসে যায় তাহলে সেই পার্থক্য গড়ে কোনো লাভ নেই। এমন দিকে পার্থক্য গড়তে হবে যাতে প্রতিযোগী সহজেই সেটা কপি করতে না পারে।

৫. পার্থক্যটুকু গড়তে হবে নিজের সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে– নিজের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে কোনো পার্থক্য করার চিন্তা আত্মঘাতী হতে পারে। প্রতিষ্ঠানের বাইরের দিকটা জাঁকজমক করতে গিয়ে যদি সে মাসে কোনো কর্মীর বেতন দিতে অসুবিধা হয় তাহলে সেই জাঁকজমক না করাই ভালো।

৬. পার্থক্যটুকু যাতে মুনাফা অর্জনে সহায়ক হয়-  ধরুন, কোনো কোম্পানি কাস্টমারের সুবিধা অসুবিধা শোনার জন্য একজন কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার নিয়োগ করলো। কিন্তু দেখা গেল সারা মাসে এরকম অভিযোগ পাওয়া গেল দুটি বা তিনটি । এখন যে বেতনে ঐ কাস্টমার ম্যানেজার নিয়োগ দেওয়া হলো আর ঐ দুই তিনটি অভিযোগ ম্যানেজ করে যে আয়ের সম্ভাবনা( পুনর্বার বিক্রয়ের মাধ্যমে)- এই দুয়ের মধ্যে পার্থক্য যদি ইতিবাচক হয় কেবল তবেই কাস্টমার ম্যানেজার রাখা সার্থক।