আপনি যে প্রতিষ্ঠানেই কাজ করুন না কেনো বেশির ভাগ সময়ই একই কাজ বারবার করতে হয়। সে ক্ষেত্রে বিরক্তি চলে আসাটা খুবই স্বাভাবিক। বিরক্তি না আসলেও অনেক সময় কাজকে উপভোগ করা সম্ভব হয়না বিভিন্ন কারণে। তখন আপনার পারফমেন্সেও দেখা দিতে পারে ঘাটতি। আপনি যখন কোম্পানীর প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন না তখন উপর থেকেও আপনার প্রতি নেগেটিভ চিন্তা তৈরি হবে। কেনো হঠাৎ করে কাজে অনীহা জাগে?।
কারণ সবসময় কাজের জন্য মোটিভেশন দরকার হয়। যখনই মোটিভেশনে টান পড়ে, তখনই আপনার দুর্বল পারফর্মেন্সের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। কাজের ক্ষেত্রে মোটিভেশন ধরে রাখাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তার চেয়েও বড় ব্যপার আপনার নিজেকেই নিজের মোটিভেশন ধরে রাখার জন্য শ্রম দিতে হবে। কিন্তু কিভাবে একজন লোক তার কাজের ক্ষেত্রে মোটিভেশন ধরে রাখবে?। সে বিষয়টিই তুলে ধরেছেন চালডাল এর সিটিও তেজস বিশ্বনাথ। কিভাবে তিনি নিজের মোটিভেশন ধরে রেখে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করেছেন নিজের উদ্দেশ্য অনুধাবনের মাধ্যমে, তাই তুলে ধরেছেন।
তেজস বিশ্বনাথঃ
“আমার জন্য কাজ কখনো কাজ হিসেবে পরিগণিত ছিলোনা। গতানুগতিক পরিভাষায় কাজ বলতে আমরা যেটা বুঝি যে নিয়মিত এবং সময়মত অফিসে আসা, প্রতিদিনের কাজ করা এবং সন্ধ্যা ছয়টায় অফিস থেকে বের হয়ে যাওয়া। আমার চিন্তাটা ছিলো ভিন্ন। সেটা ভালোভাবে বর্ণনা করতে জাপানিজ একটা শব্দ ব্যবহার করি আমি। ইকিগাই। যার অর্থ হল কোন কিছু করার পিছনে একটা কারণ থাকা, কিংবা সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠার জন্য উদ্দেশ্য রাখা।
প্রতি সকালেই যখন আমি ভোরে ঘুম থেকে উঠি আমার ব্রেইন নতুন নতুন আইডিয়াতে ভরপুর থাকে। আমি এতোটাই বেশি উত্তেজিত থাকি যে কখন কাজ শুরু করব সেটার জন্য অপেক্ষা করতেও অনাগ্রহী থাকি। আমার জন্য কঠিন বিষয় হচ্ছে, যে আইডিয়া গুলো আমার জন্য কার্যকরী সেগুলো রেখে বাকি গুলো দূরে ঠেলে দেয়া।
আমার একটা ভিশন ছিলো। এবং সর্বদাই সে ভিশন দিয়ে পরিচালিত ছিলাম। পুরো বিশ্বকে সেটা দিয়েই সংযোগ করার চেষ্টা করতাম। আজকের বিশ্ব অনেকটাই অকার্যকর। কারণ সিস্টেম এখানে কাজ করেনা কিংবা করলেও ভালোভাবে কাজ করেনা। বহুলাংশেই এটার কারণ প্রযুক্তি।
আমি বিশ্বাস করি আমরা প্রযুক্তির মাত্র পাঁচ শতাংশ বাস্তবায়িত করতে পেরেছি। বেশিরভাগই আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। এটা অবশ্যই সম্ভব এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা যেখানে অভিভূত করার মত কিছু থাকবে। এটা হয়ত নিজের কলসি বাজানোর মত একটা ব্যপার। কিন্তু আমি জানি প্রতিদিনই আমি একধাপ এগিয়ে যাচ্ছি। আমার প্রতিটা কাজের পিছনেই একটা উদ্দেশ্য থাকে। সে উদ্দেশ্যটা আমার ভিশনকে কিভাবে ছুঁতে পারব সেটা নিয়ে। এবং এই অন্তর্নিহিত আকুতিই আমাকে কাজে মোটিভেশন ধরে রাখতে সাহায্য করে।“