ওয়েবকে ধন্যবাদ যার জন্য কোম্পানী ও তার পণ্য সম্পর্কে কাস্টমার, অংশীদার ও কর্মচারীরা চাইলেই এক ক্লিকে ইনফরমেশন জানতে সক্ষম হয়েছে। কোম্পানী গুলোও ইচ্ছে করলেই অসন্তুষ্ট কাস্টমার বের করে তাদের অসন্তুষ্ট হওয়ার পিছনে কারণ বের করে তা সমাধানের পদক্ষেপ নিতে পারছে। অনলাইন প্লাটফর্মের জন্যই দুই পক্ষ খুব ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্ক তৈরি করতে পারছে যদিও তাদের দূরত্ব কয়েকশো মাইলও হতে পারে। অনলাইনের সুখ্যাতি একটি কোম্পানীর সফলতার দিকে ধাবিত করতে যেমন পারে তেমনি নেগেটিভ খ্যাতি তাকে গিরিখাতেও নিক্ষেপ করতে পারে। এজন্য অনলাইন রেপুটেশন তৈরি করা যেমন জরুরী সেটা ধরে রাখার পিছনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়াও সমান গুরুত্বপূর্ণ। পাঁচটি কৌশল কাজে লাগিয়ে সংগঠন গুলো একটি দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক বিনির্মাণ করতে পারে।
নিজের অবস্থান জানাঃ
“কিছু গবেষণা করুন। আপনার সম্পর্কে মানুষ কি বলছে দেখুন এবং জানুন। ফেইসবুক,টুইটার এমনকি লিঙ্কডিনে আপনার কোম্পানী নিয়ে কাস্টমার বা ননকাস্টমাররা কি ভাবসে সেটা শুনুন। নিজের সম্পর্কে জানার পর এবার দেখুন আপনার প্রতিযোগীদের নিয়ে তারা কি বলাবলি করছে। দুইটার মাঝে তুলনা করুন। নিজের অডিট করার পর কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করুন যেটা পরবর্তী কয়েক মাসে অর্জন করতে চান। অবশ্যই স্পেসিপিক হতে হবে। ধরুন, আগামি তিন মাসে দুই হাজার মানুষের কাছ থেকে রিভিউ আদায় করতে চান। অথবা আপনি দেখলেন আপনার কোম্পানীর ব্লগটাতে লেখা হচ্ছে না। কিভাবে সেটা এক্টিভ্লি ব্যবহার করা যায় সেটার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করুন”
কাস্টমারদের সাথে অনলাইনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুনঃ
নিজের ব্রান্ডের সুখ্যাতির জন্য দরকার চমৎকার একটি কন্টেন্ট কৌশল ঠিক করা যার মাধ্যমে কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা যাবে। কোম্পানীর ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতা প্রকাশ করুন ব্লগ, সামাজিক মাধ্যম, কেইস, প্রেস রিলিজ ইত্যাদির মাধ্যমে। এই কন্টেন্ট গুলো হবে এমন যা সবাই নিজ ইচ্ছায় অন্যকে বলতে চায় এবং অবশ্যই আপনার ব্র্যান্ডের সাথে মিল থাকতে হবে। তারপর, কাস্টমারদের ফিডব্যাক দেখতে হবে, তারা কতটা পছন্দ বা অপছন্দ করেছে অথবা নেগেটিভ মন্তব্য করেছে। এরপর পরিকল্পনা করুন কিভাবে তাদের পছন্দের জায়গাটা বাড়াবেন এবং অপছন্দের ক্ষেত্রটা কমাবেন।
অভিযোগ করার পথটা সহজ করুনঃ
অনালাইনে রেপুটেশন ধরে রাখতে আপনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হতে হবে। কিছু ঘটার আগেই বুঝে নিতে হবে কি ঘটতে পারে। যদি এমনটা হয় যে কাস্টামাররা আপনার বিরুদ্ধে পাবলিকলি অভিযোগ করার পরই আপনি জানছেন এবং পদক্ষেপ নিচ্ছেন তবে বুঝতে হবে আপনি দূরদৃষ্টি হওয়ার পিছনে কম সময় দিচ্ছেন। নিশ্চিত করুন কোন একটা মাধ্যমে যাতে কাস্টমাররা সহজেই আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে। পিটার ভ্যান বলেন “ মানুষ চায় এই বিষয়টা নিশ্চিত হতে যে কেউ তার অভিযোগটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিয়েছে, কেউ একজন তার কথা শুনছে, উত্তর দিচ্ছে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে।“ আপনি যদি শুরুতেই কোন অসন্তুষ্ট কাস্টমার খুঁজে পেতে সক্ষম হন তবে ভবিতব্য নেগেটিভ রিভিউ পাওয়া হতে রক্ষা পেয়ে কাস্টমারদের মনে পূনরায় জায়গা নেওয়ার সুযোগ আছে।
“ মানুষ চায় এই বিষয়টা নিশ্চিত হতে যে কেউ তার অভিযোগটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিয়েছে, কেউ একজন তার কথা শুনছে, উত্তর দিচ্ছে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে।“
আপনার দক্ষতা প্রতিষ্ঠা করুনঃ
এওয়ার্ড, ইভেন্ট, এক্সিবিশনসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনার কোম্পানীর খ্যাতি বৃদ্ধির সমূহ সুযোগ রয়েছে। এসব টুল ব্যবহার করে আপনি আপনার দক্ষতার বিষয়টা কাস্টমারদের বুঝাতে সক্ষম হবেন এবং তখন তারা আপনাকে বিশ্বাস করতে আগ্রহী হবে। আপনি আপনার ব্র্যান্ডকে উপরের দিকে নিয়ে যান, আপনার ডিজিটাল খ্যাতি সেই সাথে আলিঙ্গন করবে।
কাস্টমার সন্তুষ্টকরণ অগ্রাধিকার দেওয়াঃ
কাস্টমারদের সন্তুষ্ট করার ভার শুধুমাত্র কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টে ন্যাস্ত করা উচিৎ নয়। কারণ তাদের সাথে প্রতিটা যোগাযোগ বা কথোপকথন হয় আরো নতুন কিছু কাস্টমার নিয়ে আসবে না হয় কিছু কাস্টমার নিয়ে যাবে। একটি শক্তিশালী অনলাইন উপস্থিতির জন্য কাস্টমার সন্তুষ্ট করার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। এজন্য যখনই কোন কাস্টমারের সাথে কথা হবে, তখন এটা ভাবা আবশ্যক যে সে হয়ত আমাকে নিয়ে রিভিউ দিবে। তার রিভিউটা পজিটিভ করানোর জন্য যেভাবে পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ সেভাবেই নিতে হবে।
এজন্য যখনই কোন কাস্টমারের সাথে কথা হবে, তখন এটা ভাবা আবশ্যক যে সে হয়ত আমাকে নিয়ে রিভিউ দিবে। তার রিভিউটা পজিটিভ করানোর জন্য যেভাবে পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ সেভাবেই নিতে হবে।
আজকের দিনে অনলাইন রেপুটেশনই মূল রেপুটেশন। অল্প কিছু কাস্টমারই আপনার কোম্পানীকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। আর সেই পরিবর্তন হতে পারে পজিটিভ অথবা নেগেটিভ। এজন্যই এই বিষয়টার দিকে নজর দেয়া গুরুত্বপূর্ণ। এবং একটি কোম্পানীর সবার এগিয়ে আসা উচিৎ।